ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির ৭ নম্বর লোককল্যাণ মার্গে নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে এ বৈঠক শুরু হয়।প্রতিবেশী দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের এ বৈঠকে বহুল আলোচিত তিস্তা, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচন, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাসহ জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো প্রাধান্য পাবে বলে ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, বৈঠকে দুদেশের মধ্যে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক কর্মসূচি বিনিময় চুক্তির মেয়াদ ২০২৩ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনপিসিআইর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। ভারতের এনপিসিআই ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হলে দুপক্ষের মধ্যে নেটওয়ার্ক-টু-নেটওয়ার্ক সংযোগের মাধ্যমে রুপি-টাকায় পারস্পরিক লেনদেনের কাজ সহজ হবে। এ ছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বিদ্যুৎ ও রেলপথের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন হতে পারে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। দুদেশের সম্পর্ক এতটাই নিবিড় ও বহুমাত্রিক যে, এক দেশের ঘটনাপ্রবাহ অন্য দেশে প্রভাব ফেলে। সরকারের প্রতি সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তাসহ নানা কারণে কৃতজ্ঞ ও আস্থা রাখে বন্ধু দেশটি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো মনে করে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো এখন আঞ্চলিক কানেকটিভিটি ও বাণিজ্যের বড় কেন্দ্র হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া কানেকটিভিটি, সমুদ্র অর্থনীতি ও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতিতেও ঢাকাকে দিল্লি পাশে চায় বলে আলোচনা রয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের তিন মাসেরও কম সময় বাকি। সংবিধান সম্মত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও নতুন ভিসা নীতিসহ নানাভাবে সরকার চাপে রয়েছে বলে আলোচনা রয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপিও শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বলছে। ভারতেও আগামী বছরের প্রথম ভাগে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এমন বাস্তবতায় হাসিনা-মোদির বৈঠকে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে কী কথা হবে—তা নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে চলছে নানা আলোচনা।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯-১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দিতে নয়াদিল্লি যান।